আত্মহত্যা:নিদ্রাহীনতা থেকেই আত্মহত্যা প্রবণতা!

মনোকথা ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
Decrease font

ঢাকা: নিদ্রাহীনতার সঙ্গে মাদকাসক্তির সম্পর্কের বিষয়টি প্রমাণিত হলেও নিদ্রাহীনতার সঙ্গে আত্মহত্যাপ্রবণ হওয়ার সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন মনোবিজ্ঞানীরা। লিঙ্গভেদে এই প্রবণতার ঝুঁকি পরিবর্তন হয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি জার্নালে গবেষকরা বলছেন, পর্যাপ্ত ঘুম আত্মহত্যাপ্রবণ হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনে, এমনকি যারা মদ্যপায়ী তাদের ক্ষেত্রেও।

এতে বলা হয়, নিদ্রাহীনতা ও আত্মহত্যাপ্রবণতা নারীদের ক্ষেত্রে বেশি। তবে পুরুষের ক্ষেত্রে মদ্যপায়ী হলেও আত্মহত্যাপ্রবণ হওয়ার ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো প্রভাব পড়ে না, যদিও মদ্যপান নিদ্রাহীনতা ও আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

মিসিসিপি স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর মাইকেল নাডর্ফ বলেন, এ ধরনের রোগীদের নিদ্রাহীনতার চিকিৎসা করা হলেই বিষয়টি প্রমাণ হয়ে যাবে। যদিও এ নিয়ে প্রত্যক্ষ পরীক্ষা করার সুযোগ নেই।

গবেষণায় ৩৭৫ জন শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকার একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অনলাইনে কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন।

দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর মতে, অত্যাধিক মদ খাওয়ার কারণে আমেরিকায় প্রতি বছর প্রায় ৮৮ হাজার মানুষ মারা যান। একইসঙ্গে আমেরিকায় মৃত্যুর ১০টি উল্লেখযোগ্য কারণের মধ্যে আত্মহত্যা একটি।

http://www.banglanews24.com/beta/fullnews/bn/356869.html

গর্ভাবস্থায় যে খাবার খাবেন না

images

কফি অথবা ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় : পরীক্ষায় প্রমাণিত অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যাফেইন গ্রহণ করলে গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্রুণ মারা যেতে পারে।

 মদ : গর্ভকালীন সময়ে মদ্যপান করলে গর্ভের সন্তানের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হওয়াসহ সমূহ বিপদের আশংকা থাকে।

গভীর সমুদ্রের মাছ : টুনাফিশ, শার্কসহ অনেক নোনা পানির মাছে মাত্রাতিরিক্ত পারদ জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ বিদ্যমান থাকে যার বিষক্রিয়ায় গর্ভস্থ ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কাঁচা মাংস, কাঁচা ডিম, কেকবাটার, বারবিকিউ, সুশী (জাপানি খাবার), মেইওনাস, কাঁচা ডিম দিয়ে তৈরি মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার : এসব খাবারে সালমোনিলা নামক রাসায়নিক উপাদান এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে যা গর্ভের সন্তানের জন্য মঙ্গলকর নয়।

অল্প রান্না করা মাংস অথবা সিদ্ধ করা মাংস : ভালোভাবে রান্না না করলে মাংসে ক্ষতিকর ‘ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া’ নষ্ট হয় না, যা গর্ভের ভ্রুণের জন্য বিপজ্জনক।

ডা. বেদৌরা শারমিন

– See more at: http://www.jugantor.com/stay-well/2015/01/31/213267#sthash.PzcbcY0k.dpuf

স্বাধীনতা: স্বাধীনতার মাস আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস

স্বাধীনতার মাস মার্চ। এ মাসেই শুরু হয়েছিল প্রদীপ্ত অগ্রযাত্রা; আমাদের মুক্তিযুদ্ধ; রক্তের বিনিময়ে জয় করে নেয়া আকাক্সিক্ষত মুক্তি। এ মাহেন্দ্রক্ষণে স্মরণ করছি বাংলাদেশের সবুজ ভূখন্ডের জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ সম্পদ জীবনকে উৎসর্গ করা সেই মহান শহীদদের। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি পঙ্গুত্ব বরণ করে নেয়া শত-সহস্র যোদ্ধাদের। সশ্রদ্ধ সালাম সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের।
স্বাধীন দেশে আমরা যে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছি, নির্দি¦ধায় বলতে পারছি হৃদয়ের না-বলা কথাগুলো- এ সুযোগ শহীদদের নিঃস্বার্থ ত্যাগের মাধ্যমেই অর্জিত হয়েছে। শহীদদের এই দীর্ঘ মিছিলে রয়েছেন অনেক চিকিৎসকও; যারা নিজেদের পেশাগত অবস্থান ভুলে গিয়ে কৃষক-শ্রমিকের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। নিজের স্টেথোতে শুনেছেন দেশমাতৃকার জন্য শেষ রক্তবিন্দু বিলিয়ে দেয়া হৃৎপিন্ডগুলোর শেষ কম্পন। থামাতে চেয়েছেন ফিনকি দিয়ে বেরোনো তপ্ত রক্তের স্রোত। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে। জনমত তৈরী করতে চেয়েছেন বুদ্ধিজীবি সমাজে। প্রশাসনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধাদের গোপনে সহযোগিতা করেছেন তাঁরা। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের এই ত্যাগ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে তাঁদের জন্য সর্বোচ্চ মাগফিরাতের কামনা করছি।
যেই চেতনাবোধ থেকে তাঁরা এগিয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশের সেই ক্রান্তিলগ্নে, ঠিক একই চেতনা ধারণ করে এই সময়ে সুযোগের যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও নিজের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এদেশের চিকিৎসক সমাজ। আমাদের দেশপ্রেম আমাদেরকে বারবার এই জাতির কাছে দায়বদ্ধ করে দেয়। নানাবিধ অপমান ও স্বীকৃতি গোপন করার মানসিকতাকে অবহেলায় পাশে ঠেলে নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবা করাই আমাদের শপথ হয়ে দাঁড়ায়। দেশকে নিজের মায়ের মতো ভালোবেসে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে যাব আমরা, তাদের মাঝে ছড়িয়ে দেবো দেশপ্রেমের জ্বাজল্যমান শিখাটুকু; কোমল ব্যবহার, ধৈর্য্য আর দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে জয় করে নেবো তাদের হৃদয়; সবকিছুর উপর দেশকে স্থান দিয়ে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থাকে বিশ্বমানের করে তুলব আমরা- স্বাধীনতার মাসে এই স্বপ্নটুকু আমরা দেখতেই পারি।

Journal Reveiw: New England Journal of Medicine- চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি স্বর্ণমান

সুমন মোহাম্মদ (এস.এইচ.এস.এম.সি)

New England Journal of Medicine (NEJM)- চিকিৎসা বিজ্ঞানের সেরা গবেষণাগুলো সহজবোধ্য করে মানুষের কাছে পৌঁছানোর এক অনন্য প্রকাশনা। জার্নালটি বায়োমেডিকেল এবং ক্লিনিকাল প্র্যাকটিসের মূল তথ্যগুলো খুবই প্রাঞ্জল এবং সহজভাবে উপস্থাপন করে যা চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ দরকারী।
NEJM এর গবেষণায় চিকিৎসাশাস্ত্রের অনেক জটিল বিষয়গুলো আমাদের কাছে বোধগম্য হয়েছে। বিশেষ করে নতুন পরিচিত বিভিন্ন রোগ এবং চিকিৎসা সম্ভাবনা নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ, এর জনপ্রিয়তাকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। NEJMকে চিকিৎসকদের জন্য একটি ক্যারিয়ার সহযোগী তথ্য ভান্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বোস্টনের একজন চিকিৎসক পণ্ডিত জন কলিন্স ওয়ারেন ১৮১১ সাল তার সহকর্মী জেমস জ্যাকসনের সাথে জার্নালটি প্রকাশের পরিকল্পনা করেন। তাদের প্রচেষ্টার ফলে ১৮১২ সালে প্রথম এর ত্রৈমাসিক সংস্করণ বের হয়। যার নাম ছিল “New England Journal of Medicine and the Colateral branch of Medicine”. এরপর থেকে এর সাপ্তাহিক সংস্করণ বের হয়। ১৯২৮ সালে এসে এর নামকরণ করা হয় “New England Journal of Medicine”
এর গবেষণাগুলো হয় সম্পূর্ণ বিজ্ঞানভিত্তিক। এতে প্রকাশিত বেশীরভাগ রিপোর্টই ইংল্যান্ডের বাহিরের দেশ থেকে নেওয়া। একটি কঠোর পিয়ার পর্যালোচনা এবং এডিটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘঊঔগ তার গবেষণার পাণ্ডুলিপি এবং রিপোর্টের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে। আর এ কারনেই বায়োমেডিকেলীও গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল মেডিসিন প্র্যাকটিসে NEJM একটি “স্বর্ণমান” হিসেবে খ্যাতি জুড়িয়েছে।
NEJM তার পদচারনার প্রথম থেকেই মানব দেহ, বিভিন্ন রোগের প্রতিকার, এবং মেডিক্যাল সাইন্সের বিভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা এবং এর তথ্যবহুল গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশ করে আসছে। জার্নালটি ১৮৪৮ সালে “Ether Anesthesia” নিয়ে একটি ডকুমেন্টেড পাবলিক ডেমনস্ট্রেশন তৈরি করে। “Spinal Disk Rapture” নিয়ে ১৯৩৪ সালে তৈরি করে সর্বপ্রথম পূর্ণ বিবরনীমুলক পাবলিক ডকুমেন্ট এবং ১৯৪৮ সালে “Early child Leukemia”র চিকিৎসা আবিষ্কার করে প্রথম সফলতা পায়। অতি সাম্প্রতিককালে এটি অওউঝ এবং তার প্রতিকার, হৃদরোগ প্রতিরোধে Cholesterol Lowering Agent,Chronic Leukemia Gas Lunge Cancer এর প্রতিকার নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।
প্রতি সপ্তাহে বিশ্বের ১৭৭ টি দেশের প্রায় ৬০,০০,০০০ জন পাঠক এই জার্নালটি পড়ে থাকেন। সাংবাদিকতায় অভূতপূর্ব মেধার স্বাক্ষর রাখার জন্য ১৯৭৮ সালে প্রথম কোন মেডিক্যাল জার্নাল হিসেবে এটি “Polk Award” পায়। বিশ্বের ১০০ টির ও বেশি নিম্ন আয়ের দেশে এর ফ্রি অনলাইন এক্সেস পাওয়া যাচ্ছে।

বিশ্ব হার্ট দিবস: হার্টবান্ধব পরিবেশ গড়ুন সুস্থভাবে বাঁচুন”

“হার্টবান্ধব পরিবেশ  গড়ুন সুস্থভাবে বাঁচুন”
বিশ্বব্যাপী হৃদরোগ ও স্ট্রোক মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৭৩ লক্ষ লোক হৃদরোগ ও স্ট্রোকে মারা যায় এবং এটি অনুমিত যে, ২০৩০ সালে এ সংখ্যা ২ কোটি ৩০ লক্ষ পর্যন্ত বাড়তে পারে। জনসাধারনের মধ্যে হৃদরোগের কারণ ও ঝুঁকিসমূহের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ব হার্ট ফেডারেশনের উদ্যোগে পৃথিবীর ১০০ টি দেশে ২০০ এরও বেশি সংস্থা কর্তৃক ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এবারের বিশ্ব হার্ট দিবসের মূল উপজীব্য ছিল- “হার্টবান্ধব পরিবেশ গড়ুন, সুস্থভাবে বাঁচুন।”
হার্ট দিবস উপলক্ষে ২৯ তারিখ সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করে জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন। শোভাযাত্রা শেষে জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, “শিশুদের হৃদরোগ ঝুঁকিমুক্ত রাখতে স্কুল থেকে স্বাস্থ্যসম্মত টিফিন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।’’ এছাড়া অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে ছিল গণমাধ্যমে ফাষ্টফুডের বিজ্ঞাপন প্রচারে নিয়ন্ত্রণ, অস্বাস্থ্যকর খাবারে উচ্চকর আরোপ, তামাক নিয়ন্ত্রন আইনের কঠোর বাস্তবায়ন, হৃদরোগ চিকিৎসা সুলভ করার উদ্যোগ গ্রহণ প্রভৃতি।
স্বাস্থ্যবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ দিবসসমূহঃ

সেপ্টেম্বর
৪ সেপ্টেম্বর- বিশ্ব সেরেব্রাল পালসি দিবস
১০ সেপ্টেম্বর- বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস
২১ সেপ্টেম্বর- বিশ্ব অ্যালঝেইমার রোগ দিবস
২৯ সেপ্টেম্বর- বিশ্ব হার্ট দিবস

অক্টোবর
১ অক্টোবর – আন্তর্জাতিক প্রবীন দিবস
১০ অক্টোবর – জাতীয় স্তন ক্যান্সার দিবস
১০ অক্টোবর – বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস
১৫ অক্টোবর- বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস
১৬ অক্টোবর- বিশ্ব খাদ্য দিবস
২৪ অক্টোবর- বিশ্ব পোলিও দিবস

মেডিজোকস

এক চোর গভীর রাতে এক ডাক্তারের বাড়িতে চুরি করতে গেল। ওখানে আলমারি খুলতে গিয়ে দেখে সেখানে লেখা আছে- “এই বোতাম চাপলে আলমারি খুলে যাবে”।
চোর যখনি বোতামটা টিপল, তখনি সাইরেন বেজে উঠলো!
সাথে সাথেই পুলিশ চলে আসলো। পুলিশ চোরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় চোরটা মনের দুঃখে বলতে লাগলো- ‘‘দুনিয়া থেকে সততা উঠে গেছে, কাউকে বিশ্বাস করা যায় না!!!!’’

এক লোক নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে ফোন করলো।
ডাক্তারঃ কি সমস্যা আপনার?
লোকঃ স্যার সমস্যা আসলে আমার না, আমার বউয়ের।
ডাক্তারঃ তাহলে ওনাকেই ফোনটা দেন।
লোকঃ আরে ওখানেই তো সমস্যা, বউ তো কানে কম শোনে।
ডাক্তারঃ তাহলে একটা পরীক্ষা হয়ে যাক আপনার স্ত্রীর, উনি এখন কোথায় আছেন ?
লোকঃ সে এখন রান্নাঘরে।
ডাক্তারঃ তাহলে আপনি তাকে প্রশ্ন করুন, আজকে কি রান্না হচ্ছে? ১ম এ ২০ মিটার দূর থেকে, এরপর ১৫, ১২, ১০ এভাবে দূরত্ব কমাবেন। কতটুকু দূরত্ব থেকে উনি শুনতে পেলেন তা আমাকে বলুন।
লোকঃ ‘বঅঅঅউ? আজ কি রান্না হচ্ছে?’
ওপাশ থেকে আওয়াজ শুনতে না পেয়ে লোকটি দূরত্ব কমালেন। আবার জিজ্ঞাসা করলেন। এবারও জবাব নেই। এভাবে কমাতে কমাতে তিনি একেবারে রান্নাঘরের সামনে চলে আসলেন। আবারও একই প্রশ্ন, আজ কি রান্না হচ্ছে? এবার তিনি স্ত্রীর জবাব শুনতে পেলেন।
স্ত্রী রেগেমেগে বললঃ ‘আরে গরুর মাংস রান্না করছি!! এই নিয়ে সাতবার বললাম!!!’
সংগ্রহেঃ তাহমীদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
ডাক্তারঃ দেখুন, আপনার এই অপারেশনটা আমরা লোকাল এনেস্থেসিয়া দিয়ে করতে চাই।
রোগীঃ স্যার, আমার ট্যাকা-পয়সার অভাব নাই। আপনি লোকাল জিনিস না দিয়া বিদেশি জিনিস দেন!!

দাঁতের ডাক্তারের চেম্বারে দাঁত তোলার পর-
রোগীঃ স্যার, আপনাকে ভিজিট কতো দিব?
দাঁতের ডাক্তারঃ ৩০০০ টাকা!
রোগীঃ কী বলেন? আমি তো জানতাম আপনি একটা দাঁত তুলতে ১ হাজার টাকা নেন!
ডাক্তারঃ এখনো সেটাই নেই। কিন্তু আপনার দাঁত তোলার সময় আপনার চিৎকার চেচামেচিতে আমার আরো দুইটা রোগী পালিয়েছে। সে টাকা দেবেন না?

রোগীঃ স্যার, ভীষণ সমস্যা নিয়ে আপনার কাছে এসেছি। সারাদিন আমার শুধু বায়ু বের হতে থাকে। অবশ্য তেমন কোন শব্দও নেই, দূর্গন্ধও নেই। এই যে দেখেন স্যার, আমি যে আপনার চেম্বারে গত আধা ঘন্টা ধরে বসে আছি এর মধ্যে পনের-বিশ বার এই কাজ করেছি। কিন্তু কেউ টের পায়নি।
ডাক্তার কিছু না বলে খসখস করে একটা প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে বললেন, ‘এক সপ্তাহ পর আবার আসবেন।’
রোগী এক সপ্তাহ পর এলে ডাক্তার জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী, আপনার সমস্যা সমাধান হয়েছে?’
রোগীঃ না, স্যার। তবে এখন মনে হচ্ছে বায়ু ত্যাগের সময় ভীষণ শব্দ হয়।
ডাক্তারঃ যাক, ভালো হয়েছে। আপনার কানের সমস্যা সমাধান হয়েছে। এবার নাকের সমস্যার জন্য ওষুধ দিচ্ছি।

সংগ্রহেঃ মাহমুদ আবদুল্লাহ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

সম্পাদকের কলম থেকে

সার্কুলেশন শেষ হল ‘মেডি ভয়েস’ এর স্বাধীনতা সংখ্যার। সাফল্যের যাত্রাপথে আরেকধাপ এগিয়ে গেলাম আমরা। প্রথম দুটি সংখ্যা আপনাদের হাতে পৌঁছে গেল। সকলের সার্বিক সহযোগিতা এবং উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমরা অভিভূত। আপনাদের দেয়া সাহস, উপদেশ আর অনুপ্রেরণায় আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ।

চিকিৎসক সমাজে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা, আনন্দ-বেদনা, প্রয়োজন বা দাবির কথা বলার জন্য যে মুখপত্রের অভাব এত বছর ধরে আমরা অনুভব করছিলাম, সে জায়গাটি পূরণ করতে শুরু করেছে ‘মেডি ভয়েস’। আপনাদের উৎসাহ আর প্রত্যাশা কাজের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে তুলছে। আরও বড় পরিসর ও আঙ্গিকে নিজেদের তুলে ধরতে আমরা এখন বদ্ধপরিকর।

এ পত্রিকা আপনার কথা, আপনাদের কথা বলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই আপনাদের কাছ থেকে পাওয়া লেখনীগুলোই আমাদের শক্তি। ইতিমধ্যেই আমরা বিপুল সাড়া পেয়েছি আপনাদের কাছ থেকে। স্থানসঙ্কুলান না হওয়ায় আপনাদের পাঠানো সব লেখা ছাপানো সম্ভব হয়নি বলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। সামনে আরও বড় কলেবরে আপনাদের সবার লেখা প্রকাশ করার জন্য আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করব। ভবিষ্যতে ঠিক একইভাবে পাশে পাব আপনাদের, এ প্রত্যাশায় আবারও আমাদের দৃপ্ত উচ্চারণঃ ‘আমাদের কথা বলব আমরাই’।

– ‘মেডি ভয়েস’ সম্পাদনা পরিষদ।

মেধাবী নিউরন:বিজয় মাল্য যার

সাক্ষাৎকারঃ আনিকা তাহসিন
1958354_203081519902099_397660235_n২০১৩-১৪ সেশনে এম.বি.বি.এস ও বি.ডি.এস. কোর্সে ভর্তির জন্য অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ৩৪৯০টি আসনের জন্য এক অসম লড়াইয়ে অবতীর্ন হন প্রায় ৬৭,০০০ জন শিক্ষার্থী। সকলকে পেছনে ফেলে মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১৯৬.৫ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছিলেন আনিকা তাহসিন। মেডিকেল কলেজে সদ্য পা রাখা সদা হাস্যোজ্জ্বল এই হবু চিকিৎসকের মুখোমুখি হয়েছিল “মেডি ভয়েস”।
চলুন শুনি তার কথা:

মেডি ভয়েসঃ শুভেচ্ছা। কেমন আছেন?
আনিকা তাহসিনঃ ধন্যবাদ। ভালো আছি।

মেডি ভয়েসঃ প্রথমেই আসা যাক, আপনার এই সাফল্যের পেছনে কার অবদান সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন?

আনিকা তাহসিনঃ আমার বাবা-মা এবং শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের অবদানই সবচেয়ে বেশি।

মেডি ভয়েসঃ বিগত কয়েক বছরে এত নম্বর পেয়ে কেউ প্রথম হয়নি। এটি নি:সন্দেহে একটি অসাধারণ কৃতিত্ব। এ ব্যাপারে আপনার অনুভূতি কি?

আনিকা তাহসিনঃ অবশ্যই এটি আমার জন্য খুবই আনন্দের বিষয় যে, আমি এ সৌভাগ্যের অধিকারী হতে পেরেছি। অনেকটা অবিশ্বাস্যই মনে হয়েছিল প্রথমে, কারণ ২য় Position এর নাম্বার ছিল আমার চেয়ে মাত্র ০.৭৫ কম।

মেডি ভয়েসঃ অনেকেরই Surgeon হওয়ার ইচ্ছা থাকে। আবার অনেকে Cardiologist, Anesthesiologist, Neurologist etc. হতে চায়। আপনার এরকম কোন স্বপ্ন আছে কি?

আনিকা তাহসিনঃ আমার Pediatric Surgeon হওয়ার ইচ্ছা আছে।

মেডি ভয়েসঃ আমরা জেনেছি আপনি BUET এর জন্য প্রস্তুতি নিতে গিয়ে মেডিকেল অ্যাডমিশন এর প্রস্তুতি নেয়ার জন্য সেভাবে সময় পাননি। এতো অল্প সময়ে নিজেকে প্রস্তুত করলেন কিভাবে?

আনিকা তাহসিনঃ Admission এর জন্য Preparation এর কথা বলতে গেলে, বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি এইচএসসি এর সিলেবাস এর সাথে অনেকটাই হয়ে গিয়েছিল। এইচএসসি পরীক্ষার পরে Engineering+Biology Course এর সাথে যুক্ত হলেও দূর্ভাগ্যজনকভাবে Viqarunnisa Noon College এ আমাদের সেকশন এর ৫০ জনের সিরিয়ালী ইংলিশে A Grade আসায়, BUET Admission অনিশ্চিত হয়ে যায়। এরপর পুরোপুরি Medical Admission এর Preparation নেয়ার জন্য Divert হয়ে যাই। একটি শীর্ষস্থানীয় কোচিং এর সাথে যুক্ত হই এবং সাথে সাথে বাসায় Dhaka Medical College এর একজন Student প্রস্তুতি নিতে আমাকে আন্তরিকভাবে সাহায্য করেছিলেন।

মেডি ভয়েসঃ পড়ালেখার বাইরে আপনার কি কোন Extra-Curricular Activities আছে?

আনিকা তাহসিনঃ ছোটবেলায় একসময় শখের বশে নাচ শিখতাম। একটা T.V. Serial এ অভিনয়ও করেছিলাম Class Three তে পড়ার সময়। পরে অবশ্য Continue করা হয়নি। এছাড়া VNC এর English Language Club এর একজন Worker ছিলাম।

মেডি ভয়েসঃ ক্যাপ্টেন্সি, গ্রুপ মনিটরিং সহ ব্যাচ এর নানান দায়িত্ব First girl কে পালন করতে হয়। আর টিচারদের একটা আকর্ষনতো থাকেই First girl কে কেন্দ্র করে। এসব ব্যাপারে আপনার অভিজ্ঞতা কি রকম?

আনিকা তাহসিনঃ First girl এর অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গে বলতে গেলে, আমি Class VI থেকে XII পর্যন্ত একটানা First Place ধরে রাখতে পেরেছিলাম। স্কুলে বিভিন্ন সময় Class Captaincy করেছি। Class IX এ Vice Captain, Class X এ House Captain (অপরাজিত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।

মেডি ভয়েসঃ ‘আজ সমাজে ডাক্তাররা কসাই হিসেবে পরিচিত’- সমাজে প্রচলিত এ মুখরোচক কথাটির ব্যাপারে আপনার মতামত কি?

আনিকা তাহসিনঃ “Arrival of New Life” এবং “Life Saving” -এ ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারেন একজন সুদক্ষ চিকিৎসকই। তবে আন্তরিকতা এবং দক্ষতার অভাবে এ পেশায় নিয়োজিত কিছু ব্যক্তি হয়তো এভাবে অবমূল্যায়িত হয়েছে। সেবাপরায়ণ মানসিকতা এবং আন্তরিকতা থাকলে এ পেশার মাধ্যমেই প্রত্যক্ষভাবে মানুষের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব।

মেডি ভয়েসঃ ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার পর বাইরে এসে কি মনে হয়েছে আপনি বাজিমাত করতে চলেছেন?

আনিকা তাহসিনঃ পরীক্ষা দেয়ার পরে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম। মনে হয়েছিল, DMC তে Chance পাবো এবং প্রথম দিকেই থাকবো। কিন্তু Question Easy এসেছিল। তাই অনেকেরই Exam ভালো হয়েছিল বলে প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষায় একেবারে 1st ই হয়ে যাবো, এ আশা করিনি।

মেডি ভয়েসঃ আপনার এই সাফল্যে পরিবারের আত্মীয় স্বজন অনেক গর্বিত হয়েছেন নিশ্চয়ই। কাকে সবচেয়ে বেশি গর্বিত বলে মনে হচ্ছে?

আনিকা তাহসিনঃ আমার কাছে বাবাকেই সবচেয়ে বেশি গর্বিত বলে মনে হচ্ছে (হাসি)।

মেডি ভয়েসঃ আপনার অন্যান্য একাডেমিক কৃতিত্ব সম্পর্কে কিছু বলুন। এই যেমন Govt./Non Govt. Scholarship, Board Places etc.

আনিকা তাহসিনঃ Class VII এ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং SSC তে Merit List এ Position ছিল। এছাড়া আমার স্কুল, Viqarunnisa Noon School এ ক্লাস ten এ থাকতে দশ বছর (1-10) এ সর্বাধিক কৃতিত্বের জন্য ‘Best Girl’ হিসেবে Gold Medal পেয়েছি।

মেডি ভয়েসঃ আপনিতো এখন সেলিব্রেটি। এটি চিন্তা করে কেমন লাগছে?

আনিকা তাহসিনঃ (হাসি) সেলিব্রেটি হওয়ার মত এখনো কিছুই হতে পারিনি। আমি একজন সফল মানুষ হতে চাই।

মেডি ভয়েসঃ আপনিতো বুয়েটেও ভালো ফল করেছেন। সেখানে কী রেজাল্ট করেছেন? আপনার নিজের ইচ্ছা ছিল কিসে পড়াশুনো করার?

আনিকা তাহসিনঃ বুয়েটের জন্য পুরো প্রস্তুতি নিলে অবশ্যই আরো ভালো করতে পারতাম। বুয়েটে আমার মেরিট পজিশন ছিল ১৬০। বুয়েটে অ্যাডমিশন টেস্ট দিতে পারবো কিনা এ ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম না। তাই পরীক্ষার ১৫ দিন আগে selected হয়েছি জেনে বুয়েট এ্যাডমিশন টেস্ট এ attend করেছিলাম। তবে আমি মেডিকেলেই পড়ছি।

মেডি ভয়েসঃ এ দেশের মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছে আছে? থাকলে সেটি কীভাবে?

আনিকা তাহসিনঃ “সুস্থ শিশু-সবল জাতি” – তাই বিশেষভাবে শিশুদের জন্য কিছু করার ইচ্ছে আছে। সামর্থ্য হলে একটি হাসপাতাল করতে চাই যেখানে সব শ্রেণীর শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে পারবো।

মেডি ভয়েসঃ এ বছর যারা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দেবে, তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

আনিকা তাহসিনঃ যেহেতু MCQ Type এর Question থাকে, তাই বইয়ের খুঁটিনাটি তথ্যগুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। ভালো Position এর জন্য Physics ও Chemistry এর Math Practice বাদ দিলে চলবে না। এছাড়া English ও General Khowledge এর Preparation ও যথেষ্ট ভালো হতে হবে। অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাসের সাথে স্বপ্নপূরণে এগিয়ে যাও।

মেডি ভয়েসঃ ‘মেডি ভয়েস’ এর পক্ষ থেকে আপনাকে অভিনন্দন।
আনিকা তাহসিনঃ আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।

জার্নাল রিভিউঃ The Lancet – স্বাস্থ্য খাতে অর্জন ও অভূতপূর্ব অগ্রগতিতে আলোচনায় বাংলাদেশ

জার্নাল রিভিউঃ
indexসম্প্রতি সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চয়তায় বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে একটি ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ‘দ্যা ল্যানসেট’ বাংলাদেশকে নিয়ে প্রকাশ করেছে একটি বিশেষ ধরাবাহিক গবেষণা প্রতিবেদন।
শুরুতে চিকিৎসা জগতের জনপ্রিয় মেডিকেল জার্নাল ‘দ্যা ল্যানসেট’ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও জনপ্রিয় এই সাপ্তাহিক জার্নালটির যাত্রা শুরু হয় ৫ই অক্টোবর ১৮২৩ সালে। চিকিৎসাশাস্ত্রে বিশ্বব্যাপী এর অবদান অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। ‘দ্যা ল্যানসেট’ জার্নালটির প্রতিষ্ঠাতা ইংরেজ শল্যবিদ থমাস ওয়েকলী। এটি প্রকাশনার মাধ্যমে তার উদ্দেশ্য ছিল বিনোদন, প্রশিক্ষণ ও সংস্কার সাধন। ১৮০ বছরেরও অধিক প্রাচীন এই জার্নাল আজ পৃথিবীব্যাপী চিকিৎসাবিদ্যার স্বাধীন ও কর্তৃত্বব্যঞ্জক এক কন্ঠস্বর। উচ্চমানের বিশ্লেষণ ও শল্যগবেষণা, প্রকাশনা ও বিশ্বব্যাপী প্রচারের মাধ্যমে চিকিৎসা শিল্পের কাঙ্খিত পরিবর্তন সাধনই জার্নালটির প্রয়াস।
গবেষণা ও পর্যালোচনার সমালোচনাপূর্ণ মূল্যায়ন নিশ্চিত করবার জন্যে এর রয়েছে শক্তিশালী কমেন্টস সেকশন। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে ‘দ্যা ল্যানসেট’ তার লক্ষ্য অভিমুখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্প্রদায়কে পৃথিবীব্যাপি রোগব্যাধি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রমাণভিত্তিক উপাত্ত সরবরাহ করে। একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভিক দিকে ল্যান্সেট আরও ছয়টি নির্দিষ্ট বিভাগীয় জার্নাল প্রকাশ করে। এই ছয়টি সাময়িকী মাসিক ভাবে প্রকাশিত হয়। মাসিক সাময়িকীগুলো হচ্ছে: ল্যান্সেট রেস্পিরেটরি; ল্যান্সেট গ্লোবাল হেলথ প্রভৃতি।
সকল ল্যান্সেট জার্নালই অনলাইন ও মুদ্রিত উভয় ভার্সনে পাওয়া যায়। ল্যান্সেট পৃথিবীর ১৫৩টি মেডিসিন বিভাগীয় জার্নালের মাঝে মর্যাদায় দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে।
সম্প্রতি ‘দ্যা ল্যানসেট’ মেডিকেল জার্নাল বাংলাদেশকে নিয়ে একটি বিশেষ সিরিজ প্রকাশ করে “বাংলাদেশ: সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চয়তায় প্রগতি” শিরোনামে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে অর্জনগুলো উল্লেখপূর্বক ভবিষ্যত সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো হাইলাইট করে ছয়টি প্রতিবেদনপত্র প্রকাশ করে তারা। এ ছয়টি প্রতিবেদনপত্রের মধ্যে চারটির প্রধান লেখকবৃন্দ ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) এর সম্মানিত সদস্য। ‘দ্যা ল্যানসেট’ এর বাংলাদেশ সিরিজটি সংগঠন ও সুবিন্যাস করেছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ও ব্র্যাক। গত ২১শে নভেম্বর ল্যানসেট এর বাংলাদেশ সিরিজ উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব অ্যাডভোকেট মো: আব্দুল হামিদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী অধ্যাপক ডা: আ. ফ. ম. রুহুল হক, এডিটর ইন চিফ ড. রিচার্ড হর্টন এবং ব্র্যাক-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. ফজলে হাসান আবেদ। সিরিজ স্টিয়ারিং কমিটির সহ সমন্বয়কারী ছিলেন আইসিডিডিআর,বি এর উপনির্বাহী পরিচালক ডা: আব্বাস ভুঁইয়া সহ ব্র্যাক এর ভাইস চেয়ারম্যান ডা: মোশতাক রাজা চৌধুরী।

সিরিজটি নিম্ন লিখিত ছয়টি পত্র নিয়ে গঠিত:-
প্রতিবেদন পত্র-১: বাংলাদেশ প্যারাডক্স: অর্থনৈতিক দারিদ্র্য সত্ত্বেও ব্যতিক্রমী স্বাস্থ্য কৃতিত্ব
প্রতিবেদন পত্র-২: বাংলাদেশঃ ভালো স্বাস্থ্যের জন্য মেডিকেল বহুত্ববাদের প্রয়োগ
প্রতিবেদন পত্র-৩: কমিউনিটি ভিত্তিক পন্থা ও অংশীদারিত্বঃ বাংলাদেশে স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদানে নব্যতা
প্রতিবেদন পত্র-৪: বাংলাদেশে সাম্যভিত্তিক শিশু বেঁচে থাকার অর্জন ও ব্যাখ্যা: স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন স্কেল, গতি এবং নির্বাচনশীলতা
প্রতিবেদন পত্র-৫: বাংলাদেশঃ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে স্বাস্থ্যের প্রভাব হ্রাস
প্রতিবেদন পত্র-৬: বাংলাদেশ: সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চয়তায় প্রগতিঃ একটি কর্মোদ্যোগের আহবান

‘দ্যা ল্যানসেট’ অনুযায়ী এই ছয় অধ্যায় সিরিজটি পৃথিবীর অন্যতম “বিশ্ব ব্যবস্থার মহান রহস্য” এর দিকে আলোকপাত করেছে। শুধু এই অসাধারণ সাফল্য অনুসন্ধানেই নয় বরং সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চয়তায় বাংলাদেশের সম্মুখে অপেক্ষামান চ্যালেঞ্জগুলোও অনুসন্ধান করেছে এই সিরিজ। এছাড়াও সিরিজটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গবেষণা করে দেখে কীভাবে স্বাস্থ্য সেবায় যৎসামান্য খরচ, একটি দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ব্যাপক দারিদ্র সত্ত্বেও প্রত্যাশিত আয়ু, টিকা কভারেজ, যক্ষ্মা এবং শিশু ও অনুর্ধ্ব ৫ বছর বয়সীদের বেঁচে থাকায় বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে। তবে বাংলাদেশ এখনও ব্যাপক নগরায়ন ও দ্রুত নগরায়ন, ক্রনিক ও অ-সংক্রামক রোগের উত্থান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে গভীর দারিদ্র্য ও অপুষ্টি সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যার সম্মুখীন। সিরিজ রচয়িতাগণ বাংলাদেশের সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চয়তায়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি সেকেন্ড জেনারেশন প্রবর্তনের পরিকল্পনা নির্ধারণ পূর্বক উপসংহার টানেন।

অনুলিখন : বজ্র কলম

ফিরে আসব বলেই

– ডা: ফাতেমা তুজ জোহরা

ফিরে আসব বলেই
বেরিয়েছিলাম নিশুতি রাতে।
ঘুম ভাঙা চোখ- ক্লান্ত এবং অতৃপ্ত।
তবু দায়িত্বের বোধ গিরিসম।
“যাসনে মা। তুই বের হলে ভীষণ চিন্তা হয়”।
কী যে বলে না মা!! ডাক্তার আমি।
মায়ের ডাকে ফিরলে ঘরে,
প্রাণ বাঁচবে কেমন করে?
আমার হাতেই বাঁচবে আরেক প্রাণ,
রাত পেরোলেই আরেক সকাল, আরেক অভিযান।

“প্রতিদিন ডিউটি আর ডিউটি,
কতকাল বের হই না, খেয়াল আছে?
বাচ্চাগুলো পায়না তোমায় একটু কাছে”।
এমনি হাজারো অভিযোগ,
প্রিয়তমার অভিমান, অপূর্ণ অপত্য স্নেহ পায়ে ঠেলে
মূমুর্ষের আহাজারি আর স্বজনের কান্নারোলে
প্রতিরোজ এসে হাসপাতালে।
ব্যথার উপশম আর মৃত্যুপথযাত্রীর
চিলতে হাসি দেখব বলেই বেরিয়েছিলাম।

ফিরে আসব বলেই
বেরিয়েছিলাম
পুকুরে ভেসে ওঠা পঁচা গলা বীভৎস কোন
লাশ হয়ে নয়
নরপশুর লালসার আঁচড়ে, ছিন্নবিচ্ছিন্ন কোন
দেহ হয়ে নয়।
স্নেহময় বাবা হয়ে, আদুরে মেয়ে হয়ে
ফিরে আসব বলেই বেরিয়েছিলাম।
অন্ধকার প্রকোষ্ঠে চিৎকার করে
বলে ওঠে মামুন বা সাজিয়ার অশ্রুত স্বর,
“তোমাকে বাঁচাবো বলেই বেরিয়েছিলাম।
ফিরে আসব বলেই বেরিয়েছিলাম”।